আরও পড়ুন: ফুল চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
করোনা ও আম্পানের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান গদখালীর ফুল চাষিরা
গত বছর তিনি প্রথম চাষ করেছিলেন। এবার এই ফুলের বাগানের পরিধি বাড়িয়েছেন। দেশের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষের খবর পেয়ে তা দেখতে মন্ত্রী-এমপিরা ছুটে আসছেন এখানে। এরই মাঝে এসেছেন কৃষিমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী। স্থানীয় সংসদ সদস্যও এসেছেন।
এই ফুলের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হচ্ছেন, ভীষণ আগ্রহী হচ্ছেন এলাকাবাসীসহ সবাই। খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকেও ছুটে আসছেন ফুল পাগল মানুষ। শুধু তাই নয়, ফুলের জগতে অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে এই টিউলিপ ফুল।
ছয় ঋতুর এই দেশে অনেকটাই অসম্ভব হলেও গাজীপুরের দেলোয়ার হোসেন দেশের মাটিতে ফুটিয়েছেন টিউলিপ ফুল। লাল, হলুদসহ ছয় রঙের এই ফুল সৌন্দর্য্য ছড়াচ্ছে বাগানে। আর বৃদ্ধ বয়সেও বাগানে কাজ করে খুবই খুশি পরিচর্চাকারী। দৃষ্টিনন্দন ‘মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স’ নামের এই বাগান দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থী ও উদ্যোক্তারা ভিড় করছেন।
নেদারল্যান্ডস আর কাশ্মীরের মনমুগ্ধকর টিউলিপ বাগানগুলো পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশেও ব্যাপক চাষাবাদে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব। বিদেশ থেকে আনা টিউলিপ এখন ১০০ পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে।
দেলোয়ার হোসেন জানান, তার সহযোগিতায় বাণিজ্যিকভাবে যে কেউ টিউলিপ ফুল চাষে আসতে পারেন।
এর আগে তিনি জারবেরা, রজনীগন্ধা, বাহারি রঙের চায়না গোলাপ চাষেও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। ২০১৭ সালে অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক।
আরও পড়ুন: করোনায় স্বপ্নভঙ্গ ফরিদপুরের ফুল চাষিদের
করোনাভাইরাস: শত কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে যশোরের ফুল চাষিরা
তিনি তার বাগানে ৩০ জন লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বছরে অন্তত ৪০ লাখ টাকা মুনাফা করছেন।
পৃথিবী জুড়ে টিউলিপ ফুলের ব্যাপক কদর রয়েছে। নেদারল্যান্ডস, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। শীতপ্রধান জেলা পঞ্চগড়সহ বেশ কিছু অঞ্চলের তাপমাত্রা কম, তাই ওই এলাকাগুলোতে এই ফুল চাষে সফলতা সহজে পাওয়া যাবে।
বাগান মালিক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শীতপ্রধান এলাকার ফুল হলেও এক হাজার টিউলিপ চারা (বাল্ব) নেদারল্যান্ডস থেকে এনে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করেন তিনি। এবার বড় করে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে চাষ করেছেন।
বাংলাদেশেও এ ফুলের বেশ চাহিদা রয়েছে জানিয়ে কেউ উদ্যোগী হলে তিনি টিউলিপ ফুলের জাত সরবরাহ থেকে শুরু করে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘ব্যাপকভাবে এই ফুল চাষ করে বর্তমানের চেয়ে কমদামে বিক্রি করেও অনেক টাকা আয় করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: ভোর হলেই জমে উঠে ফুলের রাজধানী গদখালীর ফুল বাজার
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাগানটি পরিদর্শন করে বলেন, বাণিজ্যিকভিত্তিক এখানে টিউলিপ ফুল চাষের খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন। দেলোয়ার হোসেন যে স্বপ্ন দেখালেন, তার সম্ভাবনা দেখে সেটাকে অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে চাইছেন তারা। এই ধরনের উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে টিউলিপ ফুল ও অপ্রচলিত আরও ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল আয় করার চিন্তা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: বুড়িচংয়ে ৩ রঙয়ের পদ্মফুলের সমারোহ
চায়না গোলাপ, জারবেরাসহ নানা ধারনের ফুলের সাথে নতুন করে টিউলিপ ফুলের চাষ করে এরই মধ্যে দেলোয়ার হোসেন সাধারণ মানুষ, ফুল চাষি ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছেন।